দেনার দায়ে বিপর্যস্ত, এবার কিডনি বিক্রির আর্জি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ দম্পতি।

নদিয়া: বাজারে ক্রমাগত আর্থিক দেনার চাপ। মাথার উপর দেনা-পাওনার পাহাড়, সব মিলিয়ে জীবনের চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন নদিয়ার ধানতলা থানার হালালপুর গ্রামের দম্পতি। পেশায় রুপোর অলংকার ব্যবসায়ী খোকন সন্ন্যাসী এবং তাঁর স্ত্রী অলকা সন্ন্যাসী। দিনের পর দিন পাওনাদারদের চাপে পড়ে শেষমেশ কিডনি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। দীর্ঘদিন ধরেই খোকনবাবু নিজ হাতে রুপোর গহনা তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন।

কিন্তু কয়েক বছর ধরে ব্যবসায় মন্দা হাওয়াই ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে মাথার উপর। পাওনাদারদের চাপ এতটাই বেড়ে যায় যে, একসময় আত্মহত্যার কথাও ভাবতে শুরু করেন দম্পতি। কিন্তু তাদের কন্যার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত থেকে তারা অনর। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচার আশায় তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন নিজেদের একটি করে কিডনি বিক্রি করার। এই মর্মে তাঁরা সরকারি সহায়তার আশায় নদীয়ার রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকের বিডিও শুভজিৎ জানার কাছে আবেদন জানান।

বিডিও শুভজিৎবাবু জানান, “এইভাবে কিডনি বিক্রি করা অবৈধ এবং অমানবিক। সরকারিভাবে সাহায্যের দরজা খোলা রয়েছে। প্রয়োজনে আমরা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে অথবা অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এই মুহূর্তে খোকন সন্ন্যাসীর পরিবার চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁদের পরিবারে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা এবং একমাত্র ৯ বছরের কন্যা সন্তান। বাড়ির ভেতরেও পাওনাদারদের চাপ এতটাই বেড়ে গেছে যে, নিরাপদে বসবাস করাটাই দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে এখন তাদের।

খোকনবাবুর কথায়, “আমরা আর পারছি না। আত্মসম্মান তো দূরের কথা, দুমুঠো ভাত জোটানোই মুশকিল হয়ে গেছে। সরকারের কাছে সাহায্য চাই, নয়তো সত্যিই কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলব।”এখন দেখার প্রশাসন কত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই পরিবারকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারে। তবে যত দিন যাচ্ছে ততই আর্থিক চাপে ভেঙ্গে পড়ছে পরিবারটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Post Author

Martha Jean

It is a long established fact that a reader will be distracted by the readable content.

Popular Articles

Top Categories

Top News

Social

Tags