শান্তিপুরের মধ্যমণি অজয় দে’র মাটির তৈরি আবক্ষ মূর্তি তৈরি করে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল শিল্পী বিশ্বজিৎ দেউড়ি

নদীয়া: সদ্যপ্রয়াত শান্তিপুরের মধ্যমণি অজয় দে’র মাটির তৈরি আবক্ষ মূর্তি তৈরি করে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল শিল্পী বিশ্বজিৎ দেউড়ি।

শান্তিপুরের মধ্যমণি অজয় দে। রাজনৈতিক দলাদলি, প্রশাসনিক কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি বাদ দিয়ে ধীর স্থির ধৈর্যবান স্বল্পভাষী এই মানুষটির সাথে শান্তিপুরবাসীর সম্পর্ক নিবিড়! সমাজের বিভিন্ন স্তরে তার অবাধ বিচরণ ছিলো। ছোটো থেকে বড়ো, দলীয়কর্মী হোক বা রাজনৈতিক বিরোধী, বা অরাজনৈতিক ক্লাব, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন , খেলার মাঠ, দুর্গাপুজো রাস হোক বা ঈদ! সর্বত্রই তার গাম্ভীর্যপূর্ণ ব্যক্তিত্ব মোহিত করতো অনেকেই!

তবে রাজনৈতিক চাটুলতা না থাকার কারণে অনেকে তার এই ব্যক্তিত্ব কে অহংকার বলে ভাবতেন। কিন্তু এই ভাবার সীমারেখা অতিক্রান্ত করে, একবারের জন্য সান্নিধ্য পেয়ে ভুল ভেঙেছে অনেকেরই, তবে তা একেবারে শেষ দিকে।


শান্তিপুর থানার মোড়ের বিখ্যাত কানাই দেউড়ি, বলাইচাঁদ দেউড়ির বাড়িতে অসাধারণ স্থাপত্য ভাস্কর্য্য, আবক্ষ মূর্তি তৈরীর অসাধারন শিল্পকর্ম দেখতে এসেছিলেন বেশ কয়েকবার। দেউড়ি পরিবারের সাথে তার দাদা অধ্যাপক অসমঞ্জ দের সময় থেকে নিবিড় যোগাযোগ। অসমঞ্জ দের আমল থেকেই বলাইচাঁদ দেউড়ি রাজনীতিতে অজয় দের বন্ধু স্থানীয় সহকর্মী ছিলেন সেসময়।

তবে চাকরির কারণে খুব বেশি সময় দিতে পারতেন না তিনি। তার উত্তরসূরি বিশ্বজিৎ দেউড়ি বলেন ছোটবেলায় বাবার সাথে অজয় দের বাড়িতে যাওয়া, বিজয় দশমীতে দলীয় কর্মীদের মিষ্টি বিতরণ করা নানা স্মৃতি মনে পড়ে, সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও, তার ব্যক্তিত্ব আমাকে মুগ্ধ করে। তিনি চলে যাওয়ার পরে, মানসিক দিক থেকে বাবাও ভেঙে পড়েন। কাজের চাপ থাকলে হয়তো সম্ভব হতো না! দীর্ঘ লকডাউনে কাজের চাপ প্রায় নেই বললেই চলে। তাই বিনা অর্ডারেই সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা-ভালোবাসার আবেগে তার একটি অবয়ব তৈরি করেছি মাটি দিয়েই। অসম্পূর্ণ একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে ভাইরাল হয়েছে, তাতেই স্পষ্ট শুধু আমি নই শুভাকাংখীর সংখ্যা টা শান্তিপুরে কম নেই।

শিল্পী বিশ্বজিৎ দেউড়ির কাছ থেকে জানা যায়, মুখের অবয়ব তৈরি করাটা আন্তরিকতা ছাড়া সম্ভব নয়! ব্রোঞ্জ, প্লাস্টার অফ প্যারিস ,গ্লাস ফাইবার যা কিছু হোক না কেনো মাটি ছাড়া নিখুঁত কাজ সম্ভব নয়। প্রথমে মাটির মূর্তি তৈরি তারপর ছাঁচ তৈরি তার পরবর্তীতে বিভিন্ন উপাদান।

শিল্পী ইচ্ছে ছিল ক্লাস ফাইবার দিয়ে কাজটি করার জন্য, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কাজের বাজার খারাপ হওয়ার কারণে উপাদান কেনার প্রায় 10 হাজার টাকা জোগাড় করা অনেকটাই কঠিন এ সময়! তবে তিনি আশাবাদী তার মাধ্যমে উপকৃত বহু চাকরিজীবী ব্যবসাদার আজ সমাজে অর্থনৈতিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত। কেউ না কেউ তাকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসবেই। তবে মাটি দিয়ে বসে, দাঁড়িয়ে এইরকম নানান ভঙ্গিমায়ে আরো দু’তিনটি সম্পূর্ণ মূর্তি তিনি তৈরি করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *