নদীয়া নিউজ ২৪ ডিজিটাল: শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট নারায়ণ দেবনাথ। কয়েকদিন থেকেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন নারায়ণ বাবু। গত ২৫ দিন ধরে ভর্তি ছিলেন বেলভিউ হাসপাতালে। আজ সকাল ১০.১৫ নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। নারায়নবাবুর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। কয়েক প্রজন্মের বাঙালি কিশোরবেলার সঙ্গী তাঁর সৃষ্টি করা একের পর এক চরিত্রকে রেখে চলে গেলেন তিনি।
বয়সজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন কয়েক বছর ধরেই।গত ২৪ ডিসেম্বর তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার মিন্টো পার্কের পাশে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ফুসফুস থেকে কিডনির সমস্যা বাড়ছিল। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমছিল। অবস্থার বিপজ্জনক অবনতি হওয়ায় ১৬ জানুয়ারি তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়।অবশেষে মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৫ নাগাদ প্রয়াত হন তিনি।
১৯২৫ সালে হাওড়ার শিবপুরে জন্ম নারায়ণ দেবনাথের।ছেলেবেলা থেকেই বাড়িতে দেখেছেন বাবা-কাকাকে সোনার উপর নকশা ফুটিয়ে তুলতে। আপন মনে তাঁদের দেখাদেখি কাগজে তিনিও ফুটিয়ে তুলতে শুরু করেন গয়নার নানা নকশা। হয়ত তিনিও হতেন এক ভাল গয়নার কারিগর। অল্প বয়স থেকেই শিল্পের প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল দেখার মতো। আর্ট কলেজে ভর্তি হলেও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের জন্য পড়া শেষ করতে পারেনি তিনি। বিশ্বযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, ব্রিটিশ রাজ প্রত্যক্ষ করা নারায়ণ দেবনাথ চেয়েছিলেন সাধারণ মানুষের ঠোঁটে হাসি ফিরিয়ে দিতে। তাঁর আঙুলের ছোঁয়ায় বাঙালির জীবন জুড়ে বসে হাঁদা-ভোঁদা-বাটুল-নন্টে-ফন্টে-বাহাদুর বিড়াল। খুদে থেকে শুরু করে প্রাপ্ত মনস্ক, অনেকের মনেই শাসন করে গিয়েছে এই চরিত্রগুলি।
দীর্ঘদিন শিশুমনের পাশাপাশি বড়দের মন দখল করে থাকলেও, বাংলার সাহিত্য জগতের অনেকেই সাহিত্যিক হিসেবে তাকে মান্যতা দিতে চাননি। তাতে থোড়াই কেয়ার বাঁটুলের। হাঁদাভোঁদারও তাতে এতটুকু মাথাব্যথা নেই। তারা তো একের পর এক দুষ্টুমিতে ব্যস্ত থেকেছে। আর সে দুষ্টুমির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি বাংলার তথাকথিত সাহিত্য বাজারও। দেরি হয়েছে কিন্তু অস্বীকার করতে পারেনি। তাই ২০১৩-তে তাঁর ঝুলিতে আসে সাহিত্য অকাদেমির মতো পুরস্কার। এমনকী দেশের অন্যতম সেরা পুরস্কার পদ্মশ্রীও পান জীবনের শেষ প্রান্তে।