
নদিয়া: ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়ার ডাকাতে কালী ব্রিটিশ আমল থেকে প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পূজিত হয়ে আসছেন। এই পুজোতে ঘিরে রয়েছে বিরাট ইতিহাস। সেই সময় ব্রিটিশ শাসনকাল এই এলাকার বহু মানুষ অভুক্ত অনাহারে দিন কাটাচ্ছিলেন। ঘরে মানুষের খাবার কিছুই ছিল না। সেই সময় এলাকার কিছু যুবক ব্রিটিশ সরকারের মালগাড়ি করে চাল নিয়ে যাচ্ছিল। সেই মাল গাড়ির ওয়াগান ভেঙে ডাকাতি করে এলাকার যুবকরা।
ডাকাতিতে সফল হওয়ার জন্য কালী মায়ের কাছে মানত করে। মাল গাড়ির ওয়াগান ভেঙে বস্তা বস্তা চাল চুরি করে এনে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেয় তারা। চুরি সফল হওয়ায় সেই থেকে শুরু করে ডাকাতে কালীপুজোর। সেই থেকে আজও এই ডাকাতে কালি নামেই পুলিত হন দেবী। কালীপুজোর একদিন আগেই প্রতিমা তৈরি করে চক্ষুদান করে শুরু হয় কালীপুজো। এলাকার মানুষের কাছে এটি একটি জাগ্রত কালী বলেই পরিচিত। এলাকার সকলেই মানত করেন এবং হাতেনাতে ফল পান বলেই জানা যায়।
পরাধীন ভারতবর্ষের অভুক্ত অর্ধভুক্ত মানুষদের এই কালি নাকি একমাত্র ভরসা। প্রতিমার উচ্চতা ১৭ ফুট। রণচন্ডী মূর্তিতে মা অবতীর্ণ হন ভক্তদের মাঝে। মাজদিয়া ঘোষপাড়ার এই ঢাকাতে কালীপুজোকে ঘিরে জলে বিভিন্ন রকম সামাজিক অনুষ্ঠান। দুস্থ গরিবদের বস্ত্র দান থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ এই পুজোর একটি অঙ্গ। তাই মাজদিয়ার এই জাগ্রত দেবী ডাকাতে কালীপুজো ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে উন্মাদনা দেখা যায় চোখে পড়ার মতো। আর সারা বছর শুধুমাত্র এই কালীপুজোর দিনের অপেক্ষায় থাকে নদীয়ার সীমান্তবর্তী মাজদিয়া ঘোষপাড়া এলাকার মানুষজন।